জন্ম যদি তব বঙ্গে

প্রস্তর ফলক

শ্রেষ্ঠগল্প

“উপলক্ষ্য” অর্থাৎ সুযোগ। নিজ স্বার্থের দাবানলে  জীবন যে মূল্যহীন, গ্রন্থের শিরোনাম অনুসারে লেখা ‘উপলক্ষ্য’ গল্পে তার প্রমাণ মেলে। কাহিনীগতভাবে গল্পগুলো আলাদা ধাঁচের হলেও প্রত্যেকটি গল্পে যে বিমূর্ত জল্পনা  আছে; নিখুঁতভাবে না দেখলে পটভূমি বোঝা দায়। 
সর্বমোট ২৫ টি ছোটগল্প নিয়ে লেখা বইটি কখনো আততায়ীদের কথা বলে, কখনো জানান দেয় শিক্ষকদের আত্মত্যাগ; কখনো পকেটমার হয়ে যায় পরিবারের কাছে নায়ক, আবার ভুলের ক্ষমা মেলেনা কোথাও। এইসব টুকরো টুকরো গল্প থেকে ভালো-খারাপের দ্বন্দ্ব থেকে মুক্তি মেলে, জীবনের পরিচিতি পাওয়া যায়।

উপলক্ষ্য

ছোটনাগপুরে গোয়ালা-পল্লীর ঘরে ঘরে ঢাকের দামাদ্রিম ভেসে উঠেছে।বাতাসে হাড়িয়া আর পচুইয়ের লম্পট সৌরভ । স্বাদেন্দ্রিয়ের তন্ত্রীগুলো আকস্মিক চাঙ্গা হোয়ে উঠে। আভীর যুবক-যুবতী শিশু-কিশোরদের প্রাণশক্তির পরিচয় চারদিকে। রোজানা পৃথিবীর রং অকস্মাৎ বদলে গেছে। গোয়ালা-পল্লীর গৃহপালিত চরেন্দারা পর্যন্ত সচকিত। সাদা গোরুর রোঁয়ার রোঁয়ার রং ছাপা কারিগর। চোখে-লাগা রং আভীয়-প্রভু দুনিয়ার সব-কিছুর উপর ছড়িয়া দিয়ে যেন শান্ত হোতে চায়। আড্ডায় পুরোদমে হাড়িয়া চলে। গাভী-বলদও আজ তাঁর শরীক। বাছুরের দল তাজা দুনিয়ার স্বাদ চোখে মাতাল; ঢুঁ মারতে ছোট শিশুদের। হল্লার জন-সমদ্রে এরাও যেন ফচকে বাতাস।

পিঁ জ রা পো ল 

৩৩টি ছোটগল্পের গচ্ছিত রূপ হচ্ছে নেত্রপথ। কথাশিল্পী শওকত ওসমান লেখনী দিয়ে মানুষের জীবনের ছোট ছোট অংশগুলো ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। নেত্রপথ বলতে তিনি মানুষের জীবনের পথকে ইঙ্গিত করেছেন। বাংলার মানুষের জীবন জগৎ কে জানার-বোঝার গল্প এটি।  পুরো গ্রন্থে তিনি কখনো বাসের ভাড়া না দেওয়ার তরিকা, রাস্তার শিশুদের অভাব, গ্রামের জীবনের অপূর্ণতা নিয়ে কথা বলেছেন; আবার মানুষকে কত অবহেলা করলে সে একটা কুকুরের স্থানকে শ্রেয় মনে করে সে প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। তিনি হয়ত এক বইয়ে পুরো বাংলাকে বর্ণনা করতে চেয়েছেন। প্রত্যেক গল্পের কাহিনী যেমন আরেকটার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা, চরিত্রগুলো ঠিক সেরকম কৌশলী। শওকত ওসমানের শিক্ষণীয় গল্পগ্রন্থের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নেত্রপথ। 

নেত্রপথ

“বিগত কালের গল্প”; শিরোনাম থেকেই এ গল্পগ্রন্থের তাৎপূর্য টের পাওয়া যায়। ৪টি ছোটগল্পে রচিত এ গ্রন্থে শওকত ওসমান কিছু কাল্পনিক চরিত্রে মাধ্যমে মানুষের প্রতি বিদ্বেষ, চুরি-চাকারির প্রবণতা তুলে ধরেছেন। যে সমাজে কোনোকিছুই স্থায়ী না, সেখানে বিত্ত, যশ, খ্যাতি কখনোই একজনের থাকে না। এরা হাত বদলায়। প্রথম গল্পে শেখজীর প্রথম অবস্থা এবং পরিণতি কখনোই এক নয়। চুহা–চরিতে দেখা মেলে একধরনের উস্কানিমূলক লোকজন যারা ভীতি কে কাজে লাগিয়ে আরেকজনকে দমিয়ে রাখার জন্য ব্যাকুল। শওকত ওসমান ব্যক্তিগত জীবনেও আন্দোলন করে গেছেন এবং অন্যায়কে কখনোই প্রশ্রয় দেন নি। নিজের ধারণা, নিজের চেতনা সম্বলিত রূপক গল্পই হচ্ছে বিগত কালের গল্প।

কথাশিল্পী শওকত ওসমানের

সমূহ

জন্ম যদি তব বঙ্গে

প্রস্তর ফলক

শ্রেষ্ঠগল্প

উপলক্ষ্য

পিঁ জ রা পো ল

নেত্রপথ

বিগত কালের গল্প